স্টাফ রিপোর্টার: ফের প্রতারক নূরে ইসলাম মিলনের ১বছর সাজা বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। গত বুধবার (১০) মার্চ এই আদেশ প্রদান করেছেন বিজ্ঞ আদালত।
এ তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদি মোঃ রায়হান আলী। তার বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানা এলাকায়।
অপর দিকে মামলার আসামী প্রতারক নূরে-ইসলাম মিলন বোয়ালিয়া থানাধিন মিয়াপাড়া এলাকার মৃত ডাবলুর ছেলে।
রায়হান জানায়, আড়াই লাখ টাকা মামলায় মিলনের ১বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড হয়েছিলো। সেই ওয়ারেন্ট নিয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দাপটের সাথে শহরে চলাফেরা করতো। ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মনের ঘনিষ্টজন হওয়ায় তাকে কখনই গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
তবে শেষ পর্যন্ত দির্ঘ প্রায় আড়াই বছর পর র্যাব-৫, এর সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করে বোয়ালিয়া থানায় সোপর্দ করে। পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে বাদির টাকা পরিশোধ করেনি মিলন। তাই আবারও পূর্বের রায় বহাল রাখলো আদালত।
এরপর ২১ লাখ ৯০ হাজার টাকা চেকের মামলায় ওয়ারেন্ট হয় মিলনের। ওই ওয়ারেন্টে (১১ জানুয়ারী) বেলা ১১টায় নগরীর বোয়ালিয়া থানাধিন ঘোড়ামারা এলাকার (দিলদুয়ার বাগ) নামে একটি ভাড়া করা বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৫, রাজশাহীর সিপিএসসি, মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি অভিযানিক দল। সেই মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসে মিলন।
এরপর নয়া কৌশলে দুদকের সোর্স ও কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দুইজন বিপদগ্রস্থ লোকের কাছ থেকে ৩লাখ ও ৫লাখ টাকা মোট-৮ লাখ গ্রহণ করে মিলন। পরে তারা টাকা উদ্ধারে দির্ঘদিন ঘুরে ব্যর্থ হয়ে র্যাবকে অবগত করেন।
র্যাব কর্মকর্তারা বিষয়টি আমলে নিয়ে (২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২) শিরোইল দোসর মন্ডলের মোড়ে অবস্থিত দৈনিক উপচার পত্রিকা অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন।
এদিকে স্থানীয়রা ও সাংবাদিকদের একাংশ বলছে, অশিক্ষিত, মাদকাশক্ত, ভুয়া ম্যজিস্ট্রেট, ভুয়া দুদক কর্মকর্তা ও ভুয়া ডিবি’র গডফাদার দৈনিক উপচার প্রকাশক ও সম্পাদক ড. আবু ইউসুফ সেলিম!
তারই ডান হাত ৮ম শ্রেণী পড়–য়া ওই পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক নূরে ইসলাম মিলন। তার অপরাধের কোন ধরন নেই। চিট বাটফারী, থানার দালালি, ব্ল্যাক মেইল, মাদক দিয়ে ফাঁসানো আর সারা রাত ঘুরে বিভিন্ন পন্থায় টাকা কামানো তার কাজ। এক কথায় টাকার জন্য যে কোন দুই নম্বর কাজ তার কাছে কোন ব্যপারই না। এছাড়াও রয়েছে উপচার পত্রিকার কার্ড বানিজ্য। মানে সে নামধারী সাংবাদিক বানানোর কারিগর।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ২ থেকে ১০ হাজার টাকা দিলেই পাওয়া যায় উপচার পত্রিকায় কার্ড।
কিন্তু শর্ত হলো কার্ড বহনকারীদের প্রতি মাসে ১ থেকে ২ হাজার টাকা দিতে হয় পত্রিকার যুগ্ন সম্পাদক প্রতারক মিলনকে। তবে সরাসরি টাকা নেন না প্রকাশক ও সম্পাদক ড. আবু ইউসুফ সেলিম। তিনি যা করেন তা প্রতারক মিলনের মাধ্যমেই করে থাকেন।
তারা আরও বলেন, এই উপচার পত্রিকার সাংবাদিক মাসুদ রানা ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় প্রাইভেটকার সহ জনতা তাদের আটক করে। পরে ধোলাই পর্ব শেষ করে বাগমারা থানায় সোপর্দ করে।
এর আগে চারঘাট থানায় টাংগণ এলাকায় ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজি করার সময় সাধারন জনগন আটক করে। পরে গনধোলাই দিয়ে চারঘাট থানায় সোপর্দ করে এই চিট মাসুদকে। এছাড়াও নওগাঁ জেলায় গ্রেফতার হয় আরও দুই উপচার পত্রিকার সাংবাদিক।
এই উপচার পত্রিকার কার্ড নিয়ে আরো কতজন অশিক্ষিত মাদকসেবী, প্রতারক ও মাদক কারবারীরা দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজশাহী মহানগরীসহ, উপজেলা ও জেলাগুলোতে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই।
তবে আইন প্রয়োগকারীর সংস্থার কাছে দাবি জানাচ্ছেন নগরবাসী, সাংবাদিকবৃন্দ ও সচেতন মহল। এই সকল নামধারী কার্ড ধারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সাংবাদিকরা জানান, ফটো সাংবাদিকতা করতে শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগেনা। কিন্তু অশিক্ষিত লোকজনকে স্টাফ রিপোর্টার পদবি দিয়ে কার্ড দেয়া বড়ই লজ্জাসকর। টাকার জন্য একজন শিক্ষক এতো নিচে নামতে পারে তা উপচার পত্রিকার কর্তৃপক্ষকে না দেখলে বোঝা যাবেনা। তারও বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
মূর্খ, প্রতারক, ভুয়া ডিবি, ম্যজিস্ট্রেট পরিচয় দানকারী উপাচারের কার্ডধারী সাংবাদিকদের বিষয়ে জানতে চাইলে, দৈনিক উপচার পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, আমি যোগ্যতা সম্পন্ন লোকজনকেই পত্রিকার কার্ড দিয়েছি। এ ছাড়া অন্য কোন কথা বলতে চাননি তিনি।
অভিযোগ উঠেছে, উপচার পত্রিকা নিয়মিত ছাপা হয় না। তবে তাদের নিজস্ব কোন সংবাদ থাকলে হটাৎ হটাৎ পত্রিকাটি ছাপা হয়।
এই পত্রিকার কেউ প্রতারনা করে পুলিশ বা র্যাবের হাতে গ্রেফতার হলে। আবু ইউসুফ সেলিম নিজেই যান তদবির করতে।
সম্প্রতি যুগ্ন সম্পাদক নূরে ইসলাম মিলন ২১ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রতারনা মামলায় গ্রেফতার হলে একাধিক দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে সেলিম মামলার বাদি রায়হানের কাছে চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে যায়। সেখানে সে মামলার বাদি রায়হানের সামনে কয়েকজন লোকের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে বলে মিলন জেল থেকে বের হলে সাংবাদিক মাসুদ রানা রাব্বানীসহ কয়েকজনের হাত-পা কেটে নেয়া হবে। এই কথায় মামলার বাদি সেলিমকে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমার টাকা আত্মসাৎ করেছে। মামলা করেছি আমি। আর আপনি একজন শিক্ষক মানুষ হয়ে মূর্খের মতো অন্যদের সাথে দন্দ সৃষ্টি করছেন কেন। এতে তোপের মুখে পড়ে চুপ করে যায় সেলিম।
এরপর জেল থেকে বেরিয়ে দুদকের ভুয়া সোর্স ও দুদকের অফিসার পরিচয়ে ৮ লাখ টাকা প্রতারণা মামলায় আবার ও গ্রেফতার হয় মিলন।
খবর পেয়ে ওই দিনই রাতে আবু ইউসুফ সেলিম ছুটে যান র্যাব -৫, এর সদর দপ্তরে। সেখানে তিনি সুপারিশ করে বলেন, মিলন ভালো ছেলে। এ সময় মামলার বাদি ভুক্তভোগী হেলাল, আবু ইউসুফ সেলিমকে চরম অপমান করেন। পরে তার মুখ বাংলার ৫ এর মতো হয়ে যায়। সুযোগ বুঝে সেখান থেকে সটকে পড়েন তিনি।
টাকার জন্য মানুষ কতো নিচে নামতে পারে তার একটি উদাহরণ মোঃ সুরুজ। মাদকাশক্ত ও অশিক্ষিত সে উপচার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার কার্ডধারী। সূরুজ সাবেক ওয়েলডিং মিস্ত্রি