বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ অপরাহ্ন

নোয়াখালীর বিলকিস, ঘর ছাড়লেন টাঙ্গাইলের আঁখির প্রেমে।

 

আহসান হাবীব স্টাফ রিপোর্টারঃ-

 

টাঙ্গাইলে তরুণী আঁখি আক্তারের (১৫) কাছে ছুটে এসেছেন নোয়াখালীর তরুণী বিলকিস আক্তার (১৭)। বিলকিস নোয়াখালী সদর উপজেলার পূর্বলক্ষীনারায়নপুর গ্রামের নুরুল হক ও হোসনে আরা দম্পতির কিশোরী মেয়ে এবং আঁখি টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ময়থা গাছপাড়া গ্রামের আজাহার আলী ও জোসনা বেগম দম্পতির নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে। আর তাতে এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে হৈ চৈ, নানা গুঞ্জন।

সোমবার (২১ মার্চ) এমনই বিরল ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ময়থা গাছপাড়া গ্রামে।

জানা গেছে, ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের পরিচয়। দীর্ঘদিন কথাও হয় হোয়াটসঅ্যাপে। তাতেই একজনের প্রতি অন্য জনের আসক্তি বাড়তে থাকে। জড়িয়ে পড়েন ভালোবাসার গভীর সম্পর্কে। সিদ্ধান্ত নেন ঘর ছাড়ার। একে অপরকে ভালোবেসে গত তিন মাস আগে দু’জনে একসাথে ঘরও ছেড়েছিলেন । পরে পরিবারিক চাপে যার যার বাড়িতেও ফেরেন তারা। কিন্তু বাড়িতে ফিরেও স্বস্তি নেই এই তরুণীদের। তারা একজন অপরজনকে ছাড়া থাকতে পারছেন না কোন ভাবেই। তাইতো নোয়াখালী থেকে প্রিয়জনের কাছে ছুটে আসেন বিলকিস নামের এ তরুণী।

বিলকিস বলেন, আমি পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তারা আমাদের সম্পর্ক মানবে না, তাই বাড়ি থেকে নিরুপায় হয়ে পালিয়ে এসেছি। এখন তার পরিবার না মানলে আমরা দু’জনে অন্য কোথাও গিয়ে বসবাস করবো।

টাঙ্গাইলের তরুণী আঁখি বলেন, বিলকিস আমার কাছে এসেছে। আমি তাকে আর যেতে দিবো না। আমরা এখন কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবো না।

আঁখির বাবা আজাহার আলী বলেন, ‘আমি আঁখিকে দেড় মাস বয়সে পালতে এনেছি। সে আমার আদরের একমাত্র সন্তান। তার এমন কাণ্ডে আমি খবুই কষ্ট পেয়েছি। নোয়াখালীর ওই মেয়েটিকে তার বাড়িতে চলে যেতে বলছি- সে যাচ্ছে না। সে কিছুতেও আঁখিকে ছাড়া যাবে না। পরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হলে তারা এখানে আসবে না বলে আমাকে জানায়। প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই বিপদে আছি।’

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এমন ঘটনা কখনো শুনেননি বা দেখেননি তারা। বিষয়টি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সেকান্দার আলী স্বপন জানান, নোয়াখালীর ওই মেয়েটি রোববার সন্ধ্যায় এসেছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। দুই কিশোরীর দাবি- তারা কেউ কাউকে ছাড়া থাকবে না। তারা গার্মেন্টসে চাকরি করে একত্রে সারাজীবন কাটাবে বলে জানিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গেও কথা হয়েছে। নোয়াখালীর ওই মেয়েটির পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। মেয়েটির পরিবার এলে তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) নাহিদা পারভীন বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে নোয়াখালীতে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। মেয়েটির প্রকৃত অভিভাবকের খুঁজে পেলে তাদের হাতে মেয়েটিকে ফিরিয়ে দেবো। আর তার পরিবার খুঁজে না পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ
ব্রেকিং নিউজ