শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন

ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করছেনা পুলিশ আসামির খুঁটির জোর কোথায়,,

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ এবং ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবির ঘটনায় দৈনিক সমকালের শরীয়তপুর প্রতিনিধি ও দৈনিক রুদ্রবার্তা পত্রিকার সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাইলটের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের দুই মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ আসামী ধরছেনা। এদিকে পুলিশ মামলা দায়েরের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন সহ স্বাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহনেও গড়িমসি লক্ষ্য করা গেছে। আসামি তার নিয়মিত কাজ চালিয়ে গেলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছেনা। এ ঘটনায় বাদী-স্বাক্ষীদের মাঝে ক্ষোভসহ মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বংশাল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন এক নারী সাংবাদিক। সেই মামলায় ভুক্তভোগি নারীর মেডিকেল পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে গত ৭মার্চ। তবে কেনো প্রায় দুই মাসেও আসামী ধরতে পুলিশ ব্যর্থ? এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যে উঠে এসেছে দায়িত্বরত পুলিশদের ঘুষ বাণিজ্যের কথা।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, সেই নারী সাংবাদিকের স্বামী মারা যাবার পর থেকেই থেকেই নানা ছুঁতোয় তার কাছে ফোনে, ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে কিংবা সরাসরি প্রথম স্ত্রীর সাথে পারিবারিক নানা সমস্যার কথা বলে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে আসছিলেন পাইলট নামের এক সাংবাদিক। প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় নানা ছলছুতোয় তার বাসায় গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং গোপনে ধারণকৃত ভিডিও ভাইরাল করা হবে বলে কৌশলে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন।

বিষয়টি সাংবাদিক নেতাদের কাছে জানিয়ে কোনো সুরাহা পাননি সেই নারী সাংবাদিক। এরই মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে দু’জনের একান্ত মূহুর্তের ভিডিও চিত্রের একটি স্কীনশর্ট, অনৈতিক কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয় পাইলট।

ফলে মানসিকভাবে ভেঙে পরা সেই নারী সাংবাদিক ১৯ ফেব্রুয়ারি ফেসবুক লাইভে গিয়ে আত্মহত্যার ঘোষণা দিলে তাৎক্ষনিকভাবে বংশাল ও লালবাগ থানা পুলিশ এসে তাকে শান্ত করে এবং তাকে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরামর্শ দেন। ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি বংশাল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করেন, যার নং ৬৩ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারা।

পাইলট সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। পাইলটের বিরুদ্ধে নারীঘটিত অভিযোগের কারণে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারী সংগঠন থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়।

এছাড়া কয়েক বছর আগে পাইলট শরীয়তপুর এলাকায় এক নারীর ঘরে অনৈতিক মেলামেশাকালে এলাকাবাসি তাকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন তিনি। পরে মামলাটি স্থানীয় এক রাজনীতিবিদের মধ্যস্থতায় বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সাজামুক্ত হন।

এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি আতাউল্লাহ খান আতা নামে এক ব্যক্তি ধর্ষক পাইলটের পক্ষ নিয়ে বিষয়টি মীমাংসার জন্য এবং মামলা তুলে নিতে সেই নারী সাংবাদিকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেছেন বলেও জানা গেছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে, গ্রেফতার এড়াতে অভিযুক্ত পাইলট ধারাবাহিকভাবে বংশাল থানায় উৎকোচ পাঠিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ তিনি ৩০ হাজার টাকা পুলিশকে পাঠিয়েছেন। ফলে মামলা করেও অভিযুক্তকে শাস্তির আওতায় আনার বিষয়ে হতাশ মামলার বাদি ওই নারী সাংবাদিক।

তবে এ বিষয়ে একাধিকবার পাইলটের ০১৭১৬৯৫৬৩৩০ নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ
ব্রেকিং নিউজ