সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রাম নগরীর অত্যন্ত ব্যস্ত এলাকা গুলোর মধ্যে একটি হলো চকবাজার। কে,বি, আমান আলি রোড, ডিসি রোড এবং চকবাজার এর সংযোগস্থল হলো ধনীরপুল। এরই প্রবেশমুখে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করে চলেছে অবৈধ মাহিন্দ্র স্ট্যান্ড। গাড়িগুলো এলোমেলো ভাবে সড়কের উপরে দাঁড়িয়ে থাকে। অন্যদিকে রাহাত্তারপুল এলাকায়ও একই অবস্থা। ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে মূল সড়কের এপার ওপার দুই দিক রাহাত্তারপুল এলাকা। দুই দিকে দুই ধরনের অবৈধ থ্রি হুইলার স্ট্যান্ড চোখে পড়ে। রাহাত্তারপুল টু মাজার গেট এলাকায় ব্যাটারি চালিত অবৈধ টমটম স্ট্যান্ড এবং রাত্তারপুল টু ধনীরপুল এলাকায় দুই দিকে দুই গ্রুপের দৈনিক চাঁদাবাজি দৃশ্যমান। সড়কের উপরে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত ১০-১২ টা অবধি দায়িত্বে নিযুক্ত চাঁদাবাজদের দেখা মেলে। তারা তাদের পরিচয় দেয় লাইনম্যান হিসেবে। তারা কোনো পরিবহন সংস্থার মেম্বার কিনা জানতে চাইলে কোন ধরনের পরিচয় পত্র দেখাতে পারেননি। হালকা থ্রি হুইলার পরিবহন সেক্টরে এইসব অবৈধ মাহিন্দ্র ও ব্যাটারিচালিত পরিবহন হতে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে অর্থ আদায়কারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে নেয়া হয় না স্থায়ী কোন ব্যবস্থা এমনটাই দাবী স্থানীয়দের। অভিযোগেও মিলছেনা তেমন কোন ফল। এই বৈধ অবৈধ ও ভুয়া নাম্বার প্লেট সংযুক্ত মাহিন্দ্র গুলোর গতি এতটা বেপরোয়া কেন এবং রোড পারমিট বিহীন কিভাবে চলাচল করছে তার তথ্যানুসন্ধানে উঠে আসে আরও ভয়াবহ চিত্র। অত্যন্ত ব্যস্ত রাহাত্তারপুল হতে ধনীরপুল কে,বি আমান আলী সড়কের উপর গাড়ি গুলোর বেপরোয়া গতি দেখলে মনে হবে সড়কে যেন দুর্ঘটনার ফাঁদ ইচ্ছে করেই পাতানো হচ্ছে। ইতিপূর্বে একাধিক সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী এইসব অবৈধ যানবাহন এর ব্যাপারে কেন স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন শিক্ষক বলেন বছরের পর বছর রোড পারমিট বিহীন ধনীরপুল সড়কের উপর অবস্থিত এইসব অবৈধ যানবাহন গুলো সব সময়ষ থেকে যাচ্ছে টিনের চশমার আড়ালে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন মাহিন্দ্র চালক জানান চালকদের কাছ থেকে দৈনিক চাঁদা তুলেন রাহাত্তারপুল এর সাজু রুবেল সহ বেশ কয়েকজন। সর্ব বিষয়ে লাইন পরিচালনায় তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয়। এছাড়াও তার সাথে আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে। এত টাকা দেয়ার পরে তাদের আয় থাকে কিনা জানতে চাইলে তারা জানান রাহাত্তারপুল হতে ধনীয়ারপুল পর্যন্ত এইসব মাহিন্দ্র গাড়ি চালাতে গাড়ির মালিকের ইনকাম ব্যতীত তাদের গুনতে হয় দৈনিক প্রতিটি গাড়ি থেকে ১২০০ টাকা চাঁদা। প্রতিদিন এই রোড পারমিট বিহীন লাইন পরিচালনায় ব্যস্ত অবৈধ লাইন ম্যানদের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে দৈনিক আদায় করা হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। এভাবে চাঁদাবাজির অর্থ দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক হিসেবে তাদের কাছ থেকে ৩ ধাপে আদায় করা হয়ে থাকে যা প্রতিমাসে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার উপরে। অবৈধ মাহিন্দ্র গুলোর বেপরোয়া তীব্র গতির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান আমাদের কোনো উপায় নেই। কারণ আমাদের এই গাড়িগুলো চালাতে দৈনিক ৪০০/৫০০ টাকার ডিজেল লাগে। এর সাথে যোগ হয় গাড়ির মালিকের ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা ইনকাম এবং দৈনিক চাঁদার ১২০০ টাকা। সব মিলিয়ে ২৫ থেকে ২৬০০ টাকা খরচ। আমরা গাড়ি চালিয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করি। যা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। আমাদের সম্পূর্ণ পরিশ্রমের টাকা চলে যায় অন্যদের হাতে। এই লাইনে বাইরের কোনো গাড়ি চলতে দেয়া হয় না। স্থানীয় কিছু ছেলেদের ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে চলছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবক জানান এই ব্যাপারে আমরা বিআরটিএ মোবাইল কোর্ট নিয়মিত পরিচালনার দাবী জানাচ্ছি এবং ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। কারণ বেপরোয়া গতির এসব গাড়িগুলোর কারনে সড়কে চলাচল করার সময় আমরা নিজেরা এবং আমাদের ছেলে মেয়েরা যেন মৃত্যুফাঁদের উপর দিয়ে যাতায়াত করা থেকে রক্ষা পায়। এসব ব্যাপারে ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন। অন্যথায় এসব অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এই ব্যাপারে টিআই প্রশাসন বাকুলিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বিষয়টি তার নলেজে রয়েছে এবং তিনি এই ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। খবর নিয়ে আরও জানা গেছে বিভিন্ন এলাকায় এমন কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার উদ্দেশ্যে জনস্বার্থে এলাকা ভিত্তিক এই ধরনের ধারাবাহিক প্রতিবেদন চলমান থাকবে।