★★ মামলার বাদী ভুক্তভোগী কিশোরীর পিতাসহ জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ★★
স্টাফ রিপোর্টার || বরিশালের বিমানবন্দর থানার মহামায়ার পুলের চিন্হিত মাদকসেবী ও বখাটে জয় অতি সম্প্রতি অপহরণ ও নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় আচমকা জামিন পাওয়ার পর মামলার বাদী ও জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সম্প্রতি গত ৭ নভেম্বর বিমানবন্দর বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় অপহরণকারী হিসেবে জয়কে গ্রেফতার করে কোর্টে চালান করে বিমানবন্দর থানার পুলিশ। এরপর মাত্র ১ মাস ১ দিনের মধ্যে জামিন পেল ধর্ষক জয়। জয়ের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ এর পূর্ব নিমাই কাশারীর একজন নাবালিকা স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিলেন ভুক্তভোগীর পিতা মো.ফারুক।
মো.ফারুক জানান, প্রধান অভিযুক্ত জয় গাজী, জয়ের বাবা আলম গাজীসহ জয়ের আপন ভাই আরিফ গাজী তার মেয়েকে স্কুলের সামনে থেকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে কথিত বিয়ের নামে নির্যাতন করেছে। জয় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাবালিতা ওই মেয়েকে আটকে রাখার পর কৌশলে আমার মেয়ে যোগাযোগ করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে জয়ের ঘর থেকে। এছাড়া মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী মার মেয়েকে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে জয়ের বিরুদ্ধে। মামলা তদন্ত চলা অবস্থায় রিমান্ডের আবেদন করেনি তদন্তকারী কর্মকর্তা। অথচ, এর মধ্যেই জয়ের মাত্র ১ মাস ১ দিনের মধ্যে জামিন হওয়াতে আমি বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা করছি।আমি জয়ের জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে রেখে সুষ্ঠু তদন্ত করার অনুরোধ করছি।
সমর্থিত একটি সূত্র বলছে, আসামীদের পক্ষে সরাসরি কাজ করছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ সানোয়ার। সূত্রমতে, এসআই সানোয়ার মামলার মূল অভিযুক্তকে সময় ক্ষেপণ করে রিমান্ড আবেদন তো করেননি বরং বাকি আসামীদের প্রকাশ্যে ঘুরতে প্রশ্রয় দেন অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে। যার প্রমাণ হচ্ছে বাকি একজনও আসামী ধরা না পড়া ও আসামীদের নারায়ণগঞ্জ কোর্টে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো। সূত্রটি আরও জানায়, মামলা থেকে অব্যাহতি দিতেও মোটা অংক লেনদেনের গুঞ্জন রয়েছে জনমুখে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সানোয়ার জানান ‘ তিনি জামিন সমন্ধে জানতেন না এবং কোন অর্থনৈতিক সুবিধা নেননি। তবে, রিমান্ড ও তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়টি সমন্ধে কোন মন্তব্য করেননি তিনি।
এদিকে, ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্ট ভিকটিমের পক্ষে আসলেও অতি স্বল্প সময়ে ধর্ষকের জামিন হওয়াকে বিচারপ্রার্থীর ক্ষেত্রে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। সচেতন মহলের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বলেন ‘ বাংলাদেশে যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধর্ষণের সাজা হিসেবে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড আইন করে দিয়েছেন, সেখানে এই ধরণের আসামীর তদন্ত চলা অবস্থায় এত দ্রুত জামিন মানুষের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যেহেতু প্রচলিত আইন নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে অতি সংবেদনশীল এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে সারাদেশ সোচ্চার। অতএব এ সময় আসামীর জামিন সমন্ধে পুনরায় বিবেচনা করে বিজ্ঞ আদালতকে ভাবার অনুরোধ করছি আমরা।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী বলেন ‘ মামলা তদন্ত চলছে। আসামীর রিমান্ডসহ বেশ কিছু আইনি কাজও বাকি রয়েছে। আমরা আসামীর জামিন বাতিল করে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার চাই ‘
মামলার প্রধান বিবাদী জয় গাজিকে ফোন দিলে তা বন্ধ থাকায় বক্তব্য সংগ্রহ সম্ভব হয়নি।