পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় ঢাকাগামী জাহিদ-৩ নামে একটি লঞ্চ আটকে স্টাফদের মারধর ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ লিটনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইকবাল মাহমুদ লিটন। শুক্রবার বিকালে উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দশমিনা থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
জাহিদ-৩ লঞ্চের ক্যাশিয়ার মো. ইউসুফ সাংবাদিকদের জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ লিটন এবং তার ভাই সাবেক যুবলীগ নেতা আবু সাহাদাত সায়েম দশমিনা হাজিরহাট লঞ্চঘাটে লোকজন নিয়ে উপস্থিত হয়ে জাহিদ-৩ লঞ্চের জন্য হাজিরহাট ঘাটে নিজের সুপারভাইজার নিয়োগ ও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
তিনি আরও জানান, লঞ্চ মালিক মো. জাহিদ নিয়োগ ও চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় শুক্রবার বিকালে উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর ঘাটে লিটন চেয়ারম্যান সমর্থিত আরিফ হাওলাদার, তরিকুল, শুভ ও সোহাগ প্যাদাসহ ২০-২৫ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা জাহিদ-৩ লঞ্চে হামলা এবং ভাঙচুর করেন। এ সময় প্রায় চার লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করা হয়।
হামলায় লঞ্চের সুপারভাইজার কামরুল (৪৬), মাস্টার আব্দুর সত্তার (৪২), কেরানি মো. জহির (৩২) ও লঞ্চে থাকা যাত্রীসহ ৯ জন আহত হন। আহতরা বরিশাল ও পটুয়াখালী চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দশমিনা থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ লিটন লঞ্চে হামলা ও চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। দশমিনার একমাত্র লঞ্চ ঘাট এটি। এখানে লঞ্চটি ঘাট না করায় স্থানীয়রা লঞ্চের লোকজনের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। সেখানে কথা কাটাকাটি হতে পারে। সেই বিষয়টি আমার জানা নেই।
উল্টো লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ঝাটকা ও অবৈধ পণ্য পরিবহণ করে বলে তিনি অভিযোগ তোলেন। এ ছাড়া নৌকার সমর্থন করায় লঞ্চ থেকে কয়েকজনের চাকরি চলে গেছে। সেই ঘটনায় লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের সমঝোতা হয়েছে বলে তিনি জানান। ইকবাল মাহমুদ লিটন বলেন, তারা তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেবে বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএর নিয়ম অনুযায়ী তাদের এখানে ঘাট করা কথা; তারা তা করছেন না। ঘাট না করায় স্থানীয়রা তাদের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। এখানে চাঁদা দাবির কোনো বিষয় না।
এ বিষয়ে দশমিনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের লোকজন থানায় এসেছেন। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’