আন্তর্জাতিক ডেস্ক >> টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে ভারত লজ্জাজনকভাবে হারার পরপরই পাঞ্জাবে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে পাঞ্জাব পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর অনুসারে, রোববার (২৪ অক্টোবর) রাতে পাঞ্জাবের ভাই গুরুদাস ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে এ ঘটনা ঘটে। তবে ফ্রি প্রেস কাশ্মীর জানিয়েছে, এদিন পাঞ্জাবের আরও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে।
কাশ্মীরভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভাই গুরুদাস ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থী তাদের ওপর হামলার ভিডিও ফেসবুকে লাইভ করেন। এতে শিক্ষার্থীদের রুমে রড-লাঠিসোটা নিয়ে একদল হামলাকারীকে তাণ্ডব চালাতে দেখা যায়।
আকিব নামে এক শিক্ষার্থী ফ্রি প্রেস কাশ্মীরকে ফোনে জানান, তাদের ওপর উত্তর প্রদেশ ও বিহারের কিছু শিক্ষার্থী হামলা করেছিল। তিনি বলেন, আমরা হোস্টেলের রুমে ছিলাম। হঠাৎ বাইরে থেকে কিছু আওয়াজ শুনতে পেলাম। কী ঘটছে দেখতে আমরা বাইরে যাই এবং দেখি, কিছু লোক অন্য ব্লকে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করছে।
একই প্রতিষ্ঠানের আরেক শিক্ষার্থী শোয়েব বলেন, তারা জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলেছিল এবং ‘তোরা পাকিস্তানি’ বলে ক্রমাগত চিৎকার করছিল। এরপর আমরা রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেই।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসে স্থানীয় পাঞ্জাবি শিক্ষার্থীরা। এসব আক্রমণ থেকে তারা আমাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছিল।
এ ঘটনার পর অনেক শিক্ষার্থী কাশ্মীরি সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, তারা কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। এ হামলায় অন্তত ছয় কাশ্মীরি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র নাসির খুয়েহামি বলেছেন, ম্যাচে ভারতের হারের পরে তিনি পাঞ্জাবের বিভিন্ন কলেজে অধ্যয়নরত কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উদ্বেগজনক কল পেয়েছেন। তিনি বলেন, পাঞ্জাব পুলিশ আমাদের আশ্বস্ত করেছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং এ হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
প্রসঙ্গত, রোববার রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়েছে পাকিস্তান। ভারতের মতো শক্তিশালী দলকে তারা হারিয়েছে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।
১৯৭৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে এ ধরনের আসরে ভারত ছিল পাকিস্তানের কাছে এক অজেয় প্রতিপক্ষের নাম। আগের ১২বারের দেখায় প্রতিবারই হারতে হয়েছে পাকিস্তানিদের। কিন্তু রোববার বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটে ভর অবশেষে সেই আক্ষেপ ঘুচলো পাকিস্তানের।