প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন পুরোদমে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিলেন মাঠে। এর পরও ভোটারদের নিজের পক্ষে টানতে পারেননি পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী এইচ এম আর কে খোকন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পেয়েছেন মাত্র ১২০ ভোট।
এই ইউনিয়নে ২ হাজার ৬৪৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাইদ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির (জেপি) বর্তমান চেয়ারম্যান এলিজা সাঈদ পেয়েছেন ২ হাজার ২৯৯ ভোট।
আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী এইচ এম আর কে খোকন বলেন, ‘দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে। আমি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের অনুসারী। আউয়ালবিরোধীরা আমার বিরুদ্ধে কাজ করায় আর বর্তমান চেয়ারম্যান জেপি প্রার্থী এলিজা সাইদকে হারাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর দিকে ঝুঁকে যান। এ কারণে আমি কম ভোট পাই। এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী ধনাঢ্য প্রার্থীদের মতো টাকা খরচ করতে না পারায় আমার শোচনীয় পরাজয় হয়েছে।’
জানা গেছে, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত সয়না রঘুনাথপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রার্থী আবু সাঈদ। ২০১৯ সালে আবু সাঈদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান হন তাঁর স্ত্রী এলিজা সাঈদ। এ বছর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আর কে খোকন। খোকন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের অনুসারী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, ‘সয়না রঘুনাথপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগ বলতেই প্রভাবশালী কাজী পরিবার। ওই পরিবার থেকে কাউকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হলে এমন শোচনীয় পরাজয়ের লজ্জা আমাদের পেতে হতো না। দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করেছে আওয়ামী লীগ। যার খেসারত দিতে হয়েছে আমাদের।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘সয়না রঘুনাথপুর ইউপি বিএনপির অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুর্বল হওয়ায় ভোট কম পেয়েছেন। আমরা কেন্দ্রে পাঠানো তালিকায় কাজী রফিকুল ইসলামের নাম প্রথম পাঠিয়েছিলাম। খোকনের নাম ছিল দ্বিতীয়। কিন্তু দল কাজী রফিকুল ইসলামকে মনোনয়ন না দিয়ে খোকনকে মনোনয়ন দেন। এসব কারণে আমাদের প্রার্থী ভরাডুবি হয়েছে।’