ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘট গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। গত সোমবার থেকে নতুন ভাড়ায় পরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। বরিশাল নগরীতে ডিজেলচালিত গাড়ির ভাড়া বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নিচ্ছে গ্যাসচালিত তিন চাকার গণপরিবহনও। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া নেয়ায় যাত্রীদের ক্ষোভ বাড়ছে।সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। প্রয়োজনের তাগিদে বাড়তি ভাড়া দিয়ে তাদের গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
বিআরটিএ বারবার বলছে, সিএনজি, অকটেন ও পেট্রোলচালিত যানবাহনের ক্ষেত্রে নতুন ভাড়া প্রযোজ্য হবে না। কিন্তু তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে (সিএনজি) চলা পরিবহনেও নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন যাত্রী পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তবে বাড়তি ভাড়া গোনাতে অধিকাংশ যাত্রীর কন্ঠে অসহায়ত্বের সুর।
যাত্রীরা বলছেন, তাদের আয় বাড়েনি, কিন্তু ছোট ছোট পরিবহনেও ভাড়া বেড়েছে। এটি তাদের ওপর একটি বিশাল চাপ তৈরি করেছে।
বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বরিশাল নগরীর সদর রোড থেকে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ভাড়া নিতো ১৫ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা। হাতেম আলি চৌমাথা থেকে লঞ্চঘাটের ভাড়া নিতো ১০ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। লঞ্চঘাট থেকে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড ভাড়া নিতো ১৫ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা। রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে হাতেম আলি চৌমাথা পর্যন্ত ভাড়া নিতো ১০ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। এভাবে প্রায় প্রতিটি সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে চালকরা সম্মিলিতভাবে নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়িয়ে নিয়েছে, যা প্রায় ৩৩-৫০%। নিরূপায় যাত্রীরা এ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে সিএনজি চালকদের কথা কাটাকাটির দৃশ্যও দেখা গেছে।
সিএনজি চালক আরিফ হোসেন বলেন, মেট্রো এলাকায় গাড়ি চালাতে মালিককে দিতে হয় ৯০০ টাকা, দিনে ৩০০ টাকার গ্যাস লাগে। প্রতিদিন গড়ে ২০০০-২২০০ টাকা ইনকাম হয়। প্রতিটি নিত্যপণ্যের দরই ঊর্ধ্বগতি। আবার গ্যাসের দামও বেড়েছে। ভাড়া না বাড়ালে আমরা না খেয়ে মরবো।
নবগ্রাম রোডের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা মুক্তা আক্তার জানান, ভাড়া নিয়ে সিএনজি চালকেরা যাত্রীদের নানাভাবে হেনস্তা করেছেন। যাত্রীস্বার্থ দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না। বর্তমানে সব পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধিতে জনগণের কষ্ট হচ্ছে। সরকারের এ বিষয়ে ভাবতে হবে।