বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন

মাঠ ঘোলা করতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা: ইনু

মাঠ ঘোলা করতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়েছে মন্তব্য করে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, এক্ষেত্রে প্রশাসনের ব্যর্থতা ছিল। এজন্য প্রশাসনে থাকা উদ্দেশ্যমূলক নিষ্ক্রিয় কর্মচারীদের খুঁজে বের করে ও জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়াটাই এখন বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার প্রধান চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, দেশের ৩২ হাজার মণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা হলেও ৫০টি এলাকায় হামলার ঘটনা প্রশাসন ঠেকাতে পারেনি। এর ব্যর্থতার দায়ভার তাদের নিতে হবে। তবে হামলাকারীদের অনেককে ত্বরিতগতিতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং জাসদের ৪৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন হাসানুল হক ইনু। এর আগে তিনি সাতক্ষীরা সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

বিকালে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় তিনি শহরে এক মশাল মিছিলে নেতৃত্ব দেন। এ সময় তার সঙ্গে জাসদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, প্রশাসন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার চেষ্টা করলেও বারবার এ ঘটনা ঘটছে।

কখনো হিন্দু মন্দিরে কখনো বৌদ্ধ মঠে, কখনো মসজিদের ইমাম বা পীরের মাজারে হিন্দুপাড়ায় বা আহমাদিয়াদের ওপর এমন সব ঘটনা দুঃখজনক উল্লেখ করে ইনু বলেন, জাতির কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো আগামীতে আর কোনো সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গি হামলা হবে না, সেই গ্যারান্টি। প্রশাসনের মধ্যে ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়দের খুঁজে বের করতে হবে।

প্রধান অতিথি হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, সব সাম্প্রদায়িক শক্তি ও জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং শেখ হাসিনার সাংবিধানিক সরকারের পদত্যাগের প্রস্তাব মাঠে আসার পর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়েছে। দুর্গাপূজাকে উছিলা হিসাবে গ্রহণ করে অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য মাঠ ঘোলা করার লক্ষ্যেই এই সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপি এ প্রস্তাব যতদিন মাঠে থাকবে ততদিন এই দেশে সাম্প্রদায়িক অপঘাত চলতেই থাকবে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় এ আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে নিরীহ মানুষ এবং মিডিয়াকর্মী যাতে এর হয়রানির শিকার না হন সেজন্য আইনটি পর্যালোচনা করে সংশোধন করা দরকার।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, যে কারণে ১৪ দল গঠন হয় তা এখনও বলবৎ রয়েছে।

কোনো দলই এর বিলুপ্তি চায়নি জানিয়ে তিনি বলেন,  ১৪ দল এখনো মাঠে আছে। তবে করোনার কারণে কার্যক্রম কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও নতুন করে তা বেগবান হবে। এ ১৪ দলই একমাত্র  আদর্শ রাজনৈতিক জোট যারা সব সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দিতে পারে।

প্রসঙ্গ উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, ক্ষমতাবাদীর নামে দলের মধ্যে গুণ্ডাবাজি চলছে এবং দুর্নীতিবাজদের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এরা ভিতরের লোক আর বাইরের শক্তি হচ্ছে জঙ্গিবাদ। এই দুই শক্তিকে প্রতিহত করার আহবান জানান তিনি।

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে জবাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল সভাপতি হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, জিয়া ও এরশাদ সংবিধান বহুভাবে কাটছেঁড়া করেছেন। আমরা ১৫ দফা সংশোধনের মাধ্যমে কিছু সাম্প্রদায়িক ও সামরিক সিদ্ধান্ত বাদ দিতে পেরেছি।

এখন সংবিধান পর্যালোচনার সময় এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন,  অসাম্প্রদায়িক প্রশাসন এবং অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক অঙ্গন ও অসাম্প্রদায়িক সংবিধান দরকার।

জেলা জাসদ সভাপতি ওবায়দুস সুলতান বাবলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিউদ্দিন মোল্লা, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহিল কাইয়ুম, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, কৃষক জোট সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই এলাহী, জাকির হোসেন লস্কর শেলী, মো. আহসানউল্লাহ, শরিফুজ্জামান বাপী, মো. সালেহিন, সোহেল আহমেদ প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক পেজ
ব্রেকিং নিউজ