মহানবীর (সা.) সামরিক কৌশলের মূল বিষয় ছিল, শত্রুর রক্ত ঝরানোর চেয়ে তাকে অসহায় ও দুর্বল করে দেওয়াকে অগ্রাধিকার দান, যতক্ষণ না সে সাহায্য সহযোগিতা করে অথবা প্রতিরোধ ত্যাগ করে।
মোটকথা মহানবী (সা.) ধ্বংস করার পরিবর্তে বাধ্য করা পছন্দ করতেন। এখান থেকে বোঝা যায় মহানবীর (সা.) রাজনীতির লক্ষ্য কোরাইশদের সমূলে ধ্বংস করা ছিল না, বরং সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন রেখে দুর্বল ও পরাজিত করা ছিল তার লক্ষ্য।
মহানবীর (সা.) সংগ্রামী জীবনে অনেক কৌশল রয়েছে তার কিছু নমুনা নিম্নে তুলে ধরা হলো——
মহানবী (সা.) নিজের প্রতিরক্ষা শক্তিকে সংখ্যা, সংঘবদ্ধতা, পরিশ্রম সামরিক প্রস্তুতি ও চারিত্রিক প্রশিক্ষণের দিক দিয়ে দ্রুত বিকশিত করেছেন, এটিকে যন্ত্রের মতো সর্বদা সক্রিয় রেখেছেন এবং এর দ্বারা তিনি বিরোধীদের ভীতসন্ত্রস্ত করে রেখেছেন।
মক্কাবাসীর বাণিজ্য পথকে অবরোধ করে তাদের নিঃশেষ করে দিয়েছেন। সমঝোতা ও চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে অনেক গোত্রকে পর্যায়ক্রমে শত্রুর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিজের সঙ্গে নিয়েছেন।
তিনি সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক রকমের কৌশল অবলম্বন করেছেন। কখনও তিনি শত্রুকে প্রস্তুতি গ্রহণ করার সুযোগ না দিয়ে অতর্কিত হামলার পন্থা অবলম্বন করেছেন। (যেমন মক্কা বিজয়)
কখনও অভিযানের ঠিকানা গোপন রেখে শত্রু পক্ষকে বিপদে ফেলে রাখতেন। (যেমন বনু মুস্তালিক যুদ্ধ)।
কখনও যুদ্ধের ফল আগে থেকে নিজের পক্ষে করে রেখেছেন (বদরের যুদ্ধ)। আবার কখনও এমন প্রতিরক্ষা কৌশল গ্রহণ করেছেন, যার সম্পর্কে শত্রুপক্ষের পূর্ব থেকে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। (যেমন খন্দক যুদ্ধ)
তাই আমরা যদি আমাদের দেশকে সামরিক শক্তিতে সমৃদ্ধ করতে চাই, তা হলে সফল রাষ্ট্রনায়ক রাসুলের (সা.) অনুসৃত কৌশল অবলম্বন করা ছাড়া কোন বিকল্প নাই।