লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধিঃ
চলমান এসএসসি, দাখিল সমমান পরীক্ষায় রবিবার (২১ নভেম্বর) ভোলার লালমোহন পৌর শহরের বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের ভীড়। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা একটি অটো রিক্সার ভেতরে ছোট্ট শিশুর কান্নার আওয়াজ। মা ছাড়া যেনও এ কান্না থামানোর কোনও সুযোগ নেই।
এগিয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটিকে কোলে নিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন এক মহিলা। তাঁর সাথে আলাপকালে জানা যায়, শিশুটি তার নাতি, নাম মো. আলী, বয়স একমাসও পেরোয়নি। আলীর মা লাইজু বেগম উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।প্রায় বছরখানেক আগে উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের প্যারিমোহন গ্রামের ইমন দর্জির সাথে বিয়ে হয়েছিল লাইজুর।
এদিকে সন্তান কোলে যেহেতু পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ নেই, তাই শিশু আলীকে নানীর কোলে রেখে পরীক্ষা দিচ্ছেন মা লাইজু বেগম।এদিন খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে ১বছর বয়সী নাতনী সামিয়াকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন নানী রেনু বিবি। আর সামিয়ার মা সুমি আক্তার উপজেলার কালমা ইউনিয়নের বালুচরহাট দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।
আলাপকালে রেনু বিবি জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে ঢাকায় খালার বাসায় বেড়াতে যায় সুমি আক্তার। প্রায় দুই বছর আগে সেখানেই সাদ্দাম নামে এক ছেলের সাথে বিয়ে হয় তার। এদিকে পরীক্ষা শুরু হলে ঢাকা থেকে শিশু কন্যা সামিয়াকে নিয়ে এলাকায় এসে পরীক্ষায় বসেছে সুমি। তাই নানীর কোলেই ঠাঁই হয়েছে শিশু সামিয়ার।
লালমোহন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে কিছু অসচেতন পরিবার তাদের সন্তানদের বিয়ে দিয়েছে। তবুও যেহেতু ওই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, এটা অবশ্যই ভাল দিক। আমরা এসব শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা অব্যাহত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
এছাড়াও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব বাল্যবিয়ে রোধে সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম।