সিজারিয়ান ডেলিভারি কমিয়ে আনা জরুরি বলে মত দিয়েছেন দেশের গাইনি ও অবস বিভাগের বিশেষজ্ঞরা। অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান ডেলিভারির বদনাম ঘোচাতে স্বাভাবিক প্রসবে মনোযোগ বাড়ানোর জন্য গাইনি চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
একই সঙ্গে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে চিকিৎসকদের প্রতি সদয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (৪ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গাইনি বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন অবস্ট্রেটিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) আয়োজিত স্বাভাবিক ডেলিভারি বিষয়ক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।
ওজিএসবির সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা বলেন, বিশ্বব্যাপী সিজারিয়ান ডেলিভারি বেড়ে গেছে। এর বিপরীতে স্বাভাবিক ডেলিভারি উদ্বেগজনক হারে কমে গেছে। সিজারিয়ান ডেলিভারিরে উপকার থাকলেও এর ক্ষতির দিকও অনেক বেশি। তাই সিজারিয়ান ডেলিভারি কমিয়ে আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। এটা নিশ্চিত করতে চাইলে প্রথমেই প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানো। পাশাপাশি পেশার প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষার লক্ষ্যে তাদের মনিটরিং বাড়াতে হবে।
নারী স্বাস্থ্যের এ দিকটি চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওজিএসবি বিলগেটস ও মিলিন্ডা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আরেকটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। দেশের ১৩টি হাসপাতালে চলছে এ প্রশিক্ষণ, যার ফলে স্বাস্থ্যকর্মীরা অনেক দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি বহুলাংশে বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ওজিএসবি সেক্রেটারি বলেন, সিজারিয়ান ডেলিভারি রোধে সেবাদাতাদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদেরকে পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা জরুরি।
অবস্ট্রেটিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি ও কিংবদন্তি চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কোহিনুর বেগম বলেন, নরমাল ডেলিভারির জন্য যথাযথভাবে রোগীকে বাছাই করতে হবে। যাকে তাকে স্বাভাবিক ডেলিভারির জন্য বাছাই করা যাবে না। উপযুক্ত মাকে বাছাই করা গেলে সহজ ও সহনশীল প্রসব সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে দেশে অপ্রয়োজনীয় সিজারের পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব, যে কারণে দেশে-বিদেশে আমাদের সীমাহীন বদনাম হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ঘরে-বাইরে, পৃথিবীর সব জায়গাতে আমাদের বদনাম হয়েছে। এ বদনাম ঘোচাতে চাইলে, নিজের গরজেই স্বাভাবিক ডেলিভারি বাড়াতে হবে।