ডেস্ক রিপোর্টঃ
চাঁদপুরের হাইমচরের দক্ষিণ চরভৈরবী এলাকার দিনমজুর অসহায় সংখ্যালঘু বিজয় মহাজন ও তার পরিবারের প্রায় ১৮ একর একত্রিশ শতক জায়গা জাল
জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্তরা হলেন, চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান কবির শেখ ও তার আপন চাচাতো ভাই বহু মামলার আসামী
বিএনপি নেতা ফজলু শেখ।আর তাদের এই ঘৃণ্য অপকর্মের নেপথ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তাকারী হিসেবে চাঁদপুর উপজেলা প্রশাসন এবং হাইমচর উপজেলা
চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারীর নাম উঠে এসেছে।
জানা যায়, সংখ্যালঘুদের উপর সংঘবদ্ধ এ চক্রটির অত্যাচার নির্যাতনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পর্যন্ত গড়িয়েছে।সমস্যা সমাধানে নির্দেশও দেয়া হয়েছিল
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া নির্দেশনার পর কয়েকবছর কেটে গেলেও এখনো ভূমিদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হয়নি অসহায় সংখ্যালঘু
পরিবারটি।বরং কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই তাদের পৈত্রিক জায়গার উপর রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছে এলজিইডি।তাদেরকে দেয়া হয় নি কোনপ্রকার
ক্ষতিপূরনও।স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করায় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হুমকির মুখে পড়েছেন
অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারের সন্তান বিজয় মহাজন।
বিজয় মহাজন বলেন,“কোন ধরণের ক্ষতিপূরন না দিয়ে বিনা নোটিশে এলজিইডি আমার জায়গার উপরে রাস্তা নির্মাণ করছে।অথচ এ জায়গাটি নিয়ে আদালতে
মামলাও চলমান রয়েছে।অভাবের সংসারে পেটের ভাত জোগাতে যেখানে কষ্ট হয়ে যায়,সেখানে আদালতে আবার আবেদনের মাধ্যমে কাজ বন্ধ করার
সেই সামর্থ্য আমার নেই।তাই বিষয়টি জানানোর জন্য আমাদের জেলার ডিসি স্যারকে ফোন করি।তিনি আমাকে বলেন-‘জায়গা কি মোবাইলে এনে দিবো।’
আমি একজন দিনমজুর।তাই হয়তো ডিসি স্যার আমাকে পাত্তা দেয় নি।এরপর দিকবিদিক হারিয়ে আমাদের মন্ত্রী ডা: দিপু মনিকে কল করেছিলাম।কিন্তু
তার পিএস আমাকে বলেছে-আর যদি কল করি,তবে পুলিশে ধরিয়ে দেবে।থানায় জানিয়েছি,কিন্তু তারাও কর্ণপাত করেনি।আমি একদমই অসহায়।সবাই চায়
আমরা সংখ্যালঘু পরিবার বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাই।”
বিজয় মহাজন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন,‘আমাদের জায়গাগুলো জালজালিয়াতির মাধ্যমে কবির শেখ ও বিএনপি নেতা ফজলু শেখ দখল করে রেখেছে।তাদের
ক্ষমতার দাপটে সবাই চুপটি মেরে আছে।জায়গা উদ্ধারের বিষয়ে কেউ আমাকে সহায়তা করছে না।প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশ দিয়েছিলেন আমাদের জায়গাগুলো ফেরত
দেয়ার জন্য।কিন্তু যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা সেই আদেশ পালন না করে উল্টো আমাদের হয়রানি করছে।’
তিনি বলেন,‘এর আগে অপরাধ বিচিত্রায় সংবাদ প্রচারের পর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান কবির শেখকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।কিন্তু আমাদের জায়গার
বিষয়ে কোন সমাধান দেয় নি কেউই।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কঠোরভাবে নির্দেশ দিলে হয়তো পৈর্তৃক সম্পত্তি ফিরে পাবো এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায়
মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবো।’
এদিকে এর আগে সরেজমিনে পরিদর্শন করে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর নির্যাতনের বাস্তব চিত্র পরিলক্ষিত হয়। অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধানে বেরিয়ে
আসে অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারের নির্মম আর্তনাদের কথা আর ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
২য় খন্ড আসতেছে…….